বর্ষার জলে ধোয়া উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্সের যে কী আশ্চর্য রূপ তা না দেখলে বোঝানো যাবে না। শরতের ঘন নীল আকাশে ছোট ছোট তুলোর স্তুপের মতো মেঘ। নিচে চা-বাগান আর ধানখেতের কচি সবুজ দূরের গাঢ় সবুজ বনে ঢাকা ঢেউ-খেলানো পাহাড়ে গিয়ে মিশেছে। তিস্তা-তোর্সা-জলঢাকা তাদের ভয়ঙ্করী রূপ ছেড়ে গা এলিয়ে দিয়েছে। তাদের জলস্রোতে কিছুদিন আগের সেই ধার নেই। অন্য পাহাড়ি নদী-ঝর্ণাগুলো অবশ্য তন্বী ও চঞ্চলা। তারা ছোট বড় পাথরকে ধাক্কা দিয়ে দিয়ে প্রচন্ড বেগে ও কলরবে ধেয়ে চলেছে। দু’ধারের বনের সবুজ আর আকাশের নীল সেই জলকে দিয়েছে অপূর্ব এক ফিরোজা রঙ।

জঙ্গলের বুক চিরে চলে গেছে মহাসড়ক
গোরুমারা, চাপড়ামারি, জলদাপাড়া, চিলাপোতা এসব জঙ্গলের বুক চিরে চলে গেছে চমৎকার পিচের রাস্তা। যানবাহন বেশি নেই। চালকেরাও খুব সাবধান – বিনা নোটিশে যখন তখন রাস্তা পার হতে পারে হাতি বা বাইসনের দল। বর্ষার জল পেয়ে জঙ্গলও হয়েছে খুব ঘন। ভিতরে কী আছে না আছে কিছুই দেখা যায় না। আমাদের প্রথম সাফারি ছিল গোরুমারার জঙ্গলে। বনের ভিতরে বেশ কিছুদূর গিয়ে দুটো ভিউ পয়েন্ট। এই ভিউ পয়েন্টগুলোর সামনে বনবিভাগ কয়েকটা “সল্ট পীট” তৈরি করেছে যেখানে নুন আর গুড় দেওয়া হয়, যা খেতে আসে জন্তু-জানোয়ারেরা। কিন্তু অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেও কোন বড় জানোয়ার চোখে পড়ল না। তবে স্পটেড ও বার্কিং ডিয়ার দেখা গেল। আর দেখা গেল এক ঝাঁক হর্নবিল বা ধনেশ পাখি। যে ভ্যালীটাতে তারা উড়ে বেড়াচ্ছিল গাছ থেকে গাছে, আমরা ছিলাম তার অনেক উপরে। তাই ক্যামেরায় তাদের ভালভাবে ধরা গেল না। তবে তাদের সুস্পষ্ট ছবি রয়ে গেল মনে।


ভিউ পয়েন্ট থেকে দেখলাম স্পটেড ডিয়ার ও ধণেশ পাখির ঝাঁক
দ্বিতীয় দিনের ভ্রমণসূচি তে ছিল সামসিং হয়ে রকি আইল্যান্ড, ঝালং ও বিন্দু । সামসিং ডুয়ার্সের একটা গ্রাম যেখানে রয়েছে অনেকগুলো চা বাগান। দেখে মনে হয় বাগানগুলো একেবারে দূরের পাহাড়কে ছুঁয়েছে। যে দিকে তাকানো যায়, শুধুই সবুজ। চায়ের বাগানে শুধুই যে চায়ের গাছ, তা নয়। মাঝে মাঝে বড় বড় গাছও লাগানো হয়। এর কারণ, চা গাছের পুষ্টির জন্য আলো এবং ছায়া দুইই প্রয়োজন। এই গাছগুলো থাকায় বাগানের সৌন্দর্যও বেড়েছে। দেখতে একঘেয়ে লাগে না।


সামসিং-এর চা-বাগান
মূর্তির জলধারা
কোন কোন বাগানে চা পাতা তোলা হচ্ছে দেখলাম। তবে, পিঠে ঝুড়ি নিয়ে দুটি পাতা একটি কুঁড়ি তোলার যে ছবি আমাদের মনে আসে, এই বাগানগুলোতে সেভাবে চা পাতা তোলা হয় না। ঝুড়ির জায়গা নিয়েছে ব্যাগ, এবং শুনলাম শুধু কুঁড়ি আর দুটি পাতা নয়, গাছের ডগার কয়েকটি পাতা তোলা হয়। তবে এও শুনলাম যে দার্জিলিঙ পাহাড়ের কিছু বাগানে সেই পুরনো পদ্ধতি চালু আছে।
সামসিং থেকে সামান্য দূরত্বে রকি আইল্যান্ড আসলে কোন দ্বীপ নয়। এখানে মূর্তি নদী পাহাড় থেকে প্রচন্ড বেগে নেমে এসে ধাক্কা খাচ্ছে বিশাল বিশাল অসংখ্য পাথরে, সৃষ্টি করছে সাদা ফেনা, এবং এঁকে বেঁকে ছুটে চলেছে সমতলের দিকে । এই বড়বড় পাথর গুলোর জন্যই সম্ভবত এই জায়গাটির নাম রকি আইল্যান্ড। জল একেবারে কাচের মতো স্বচ্ছ কিন্তু সবুজের আভাস রয়েছে। এক কথায় বলতে গেলে অপূর্ব দৃশ্য। আর কিছু দিন পরে নদীর বেগ কমে যাবে এবং তখন নিশ্চয় অনেকেই এই জলে গা ডোবাবেন।

রকি আইল্যান্ড

রকি আইল্যান্ডের একাংশ
চাপড়ামারি জঙ্গলের মধ্য দিয়ে ছিল আমাদের যাত্রাপথ। এখানে দেখলাম পরীক্ষামূলক কফির ও গোলমরিচের বাগান। অনেক জায়গায় রয়েছে রবার গাছের বাগান। কিন্তু পথের সর্বত্র হাতির ছবি দিয়ে সতর্কবার্তা দেওয়া থাকলেও আমরা এবারের সফরে কোন বন্য হাতি দেখতে পাইনি।
ঝালং যাওয়ার পথে যে ছোট্ট গ্রামে আমরা লাঞ্চ করলাম তার মতো সুন্দর জায়গা আমি খুব কম দেখেছি। খরস্রোতা জলঢাকার ধারে সুন্দর খাওয়ার ব্যবস্থা। খেতে খেতে দেখছি পাহাড়ের সংকীর্ণ খাদের মধ্য দিয়ে ছুটে আসছে দুরন্ত নদী পাথরে পাথরে আঘাত করে করে। তার কলরবে জায়গাটা মুখরিত, অথচ এই শব্দে আমাদের শহুরে কান ফাটানো আওয়াজের মতো মাথা ধরে না, বরং মন শান্ত হয়ে যায় । খেতে খেতে মনে পড়ছিল অনেক বছর আগে বসনি্য়া্রভ মস্তারে ঠিক এরকমই পরিবেশে বসপা নদীর ধারে এক রেস্তরাঁয় মাছের রোস্ট দিয়ে লাঞ্চ করার কথা।
ঝালং গ্রামটা এমন সুন্দর একটা জায়গায় যেখানে বিস্তীর্ণ উপত্যকা, অপর পাড়ে পাহাড়ের গায়ে ভূটানের ঘরবাড়ি আর নিচে বয়ে যাওয়া জলঢাকা নদী চোখের সামনে যেন বিশাল এক গালিচা বিছিয়ে দিয়েছে। আর একটু উজানে বিন্দু নামের গ্রাম। এখানে বিন্দু খোলা আর দুধ পোখরি নামে দুটো ছোট পাহাড়ি নদী এসে জলঢাকায় এসে মিশেছে, আর সেখানে বাঁধ দিয়ে জলঢাকা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি হয়েছে। অবশ্য বাঁধের ধারে যাওয়া নিষেধ। বর্ষায় বাঁধের জলস্তর এত বেড়েছে যে বন্ধ গেট উপচে প্রবল বেগে বেরিয়ে আসছে জল। জলঢাকার উচ্ছ্বাস আর কলরোলের অন্ত নেই।

ঝালং ভিউ পয়েন্ট থেকে

জলঢাকার আর একটি দৃশ্য
আমাদের শেষ সাফারি দুটো ছিল বিখ্যাত জলদাপাড়া ন্যাশনাল পার্কে। খুব ভোরে করলাম জীপ সাফারি। সকালে খুব হাল্কা একটা কুয়াশা থাকায় জঙ্গলটা কীরকম রহস্যে মোড়া মনে হচ্ছিল। ঠান্ডা একেবারেই ছিলনা অবশ্য। প্রথমে চোখে পড়ল ঘন ঘাসের মধ্যে এক বিশাল গন্ডারের পিঠ। বৃষ্টির জল পেয়ে ঘাসগুলো এত বেড়েছে যে, অতবড় জন্তুর দেহের প্রায় সমস্তটাই ঢাকা পড়ে গেছে। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেও গন্ডার বাবাজী আমাদের কৃপা করলেন না। এরপর আবার সেই স্পটেড ডিয়ার ও বার্কিং ডিয়ার। বার্কিং ডিয়ার আগে অনেক জঙ্গলে দেখলেও এখানেই প্রথম এর ডাক শুনলাম। অবিকল কুকুরের ডাক।


জলঢাকার জলোচ্ছ্বাস
পথের শেষে একটা ওয়াচ টাওয়ার। যথারীতি সেখানে মানুষের সম্মিলিত কোলাহল সবরকমের পশুপাখি থেকে আমাদের নিরাপদ রেখেছিল। ওয়াচ টাওয়ারে পৌঁছানোর একটু আগে উন্মুক্ত ঘাসের জমি, আর সেখানেই দেখলাম উত্তরবঙ্গের জঙ্গলের অন্যতম বিগ গেম “গউর” বা ভারতীয় বাইসনের একটা বড় দলকে। হঠাৎ দেখলে মোষ বলে ভুল হতে পারে, কিন্তু এদের বিশেষত্ব হচ্ছে হাঁটু পর্যন্ত সাদা লোম যা দেখতে সাদা মোজার মতই লাগে। কাজেই আমাদের জীপ সাফারি সম্পূর্ণ বিফল হয়নি। অবশ্য জঙ্গলের মেঠো পথে খোলা জীপে বেড়াবার নিজেরই একটা আলাদা আনন্দ আছে।

জলদাপাড়ায় গউর বা ভারতীয় বাইসন

একটা কথা এখানে না বলে পারছিনা। এখানকার জীপগুলোতে বসার ব্যবস্থা আরাম দায়ক তো নয়ই, উপরন্তু জীবজন্তু দেখার জন্যও সুবিধেজনক নয়। জিম কর্বেট বা রণথম্ভোরের টাইগার রিজার্ভেও এই একই জিপসি গাড়ি ব্যবহার হয়। কিন্তু তাতে বসার ব্যবস্থা বেঞ্চের মত, যাতে সবাই সামনের দিকে দেখতে পায়। ড্রাইভার ও গাইডের আসনের থেকে একটু উঁচুতে। ক্যামেরা স্থিরভাবে ধরে দাঁড়াতে কোন অসুবিধে নেই। পশ্চিম বাংলায় দেখলাম কোনরকমে যাত্রীদের একটা চক্কর মারিয়ে দিলেই হল। তাঁদের আর একটু সুবিধা কী করে দেওয়া যায় সেদিকে কোন নজর নেই। কিন্তু “এরকমই হয়” বলে তর্ক করতে সবাই পটু।
জীপ আমাদের যথা সময়ে নামিয়ে দিল হলং বাংলোর সামনে। তখন সকাল সাড়ে ছ’টা। আমাদের মতো আরও অনেকেই দেখলাম ভিড় করেছেন হাতির পিঠে ওঠার জন্য। একটা দল ফিরে এল, আর আমরা উঠে বসলাম আমাদের “প্রিয়দর্শিনীর” উপরে। চারজন পিঠোপিঠি বসার ব্যবস্থা বেশ ভাল এবং পড়ে যাওয়ার ভয় নেই। জীপ যায় রাস্তা দিয়ে। ঘন জঙ্গলে তার যাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু হাতি চলল সুঁড়ি পথ দিয়ে, শুঁড় দিয়ে ঝোপঝাড় সরাতে সরাতে, জল-কাদা ভেঙে। মাঝে মাঝে গাছের ডাল আমাদের মাথায় লাগছিল, তবে বড় ডালপালাগুলোকে মাহুত তার ডান্ডা দিয়ে তুলে ধরছিল। হাতিগুলো দেখলাম মাহুতের ভাষা বোঝে এবং নির্দেশ মেনে চলে। কিন্তু সে ভাষা বাংলা নয়।





খানিকটা গিয়েই হাতিগুলো দাঁড়িয়ে পড়ল স্থির হয়ে। সামান্য দূরে জঙ্গলের মধ্যে একটা বড় ডোবা, আর তার জলে গা, এমনকি মুখ পর্যন্ত ডুবিয়ে রয়েছে দুটো একশৃঙ্গী। প্রথমে কান গুলো দেখা গিয়ে ছিল। তবে একটারই খড়্গ ছিল, এবং খুবই ছোট। যখন শরীরগুলো জলের একটু উপরে উঠল তখন শুধুই ক্যামেরার ভিউ ফাইন্ডারে চোখ রেখে শাটার টিপে যাওয়া। ফিরে আসছি, দেখি হলং বাংলোর একেবারে সামনেই আর এক বিরাট চেহারার গন্ডার। সল্টপীটে নুন চাটতে এসে ছিল। ফিরে যাচ্ছে। বেশ খুশি মনেই হোটেলে ফিরলাম।
জয়ন্তী নদীর বিরাট শুকনো পাথুরে খাত দেখলেই বোঝা যায়, একসময় সে কত চওড়া ছিল। এখন তার ক্ষীণ জলধারা এই প্রান্তরের এক ধার দিয়ে বয়ে চলেছে । পরপারে ভূটানের পাহাড় ও জঙ্গল। নদীর শুকনো বুকে এক আধটা গাছ একটু ছায়া দিচ্ছে। ঠান্ডা স্বচ্ছ জলে পা ডুবিয়ে অনেকেই এক পাথর থেকে অন্য পাথরে চলে যাচ্ছেন সেলফি তুলতে। তবে প্রখর রোদে বেশীক্ষণ থাকা যায় না। বক্সা টাইগার রিজার্ভ আমাদের সূচিতে ছিল না। তবে, এর গেট দিয়ে ঢুকে একটা ছোট, কিন্তু তথ্য সম্মৃদ্ধ প্রদর্শনী দেখলাম এখানকার বন্য প্রাণী এবং পরিবেশের উপর। সত্যিই সুন্দর । আমাদের বনভ্রমণ এখানেই শেষ হল।

জয়ন্তীর শুকিয়ে যাওয়া পাথুরে খাত

জয়ন্তীর ক্ষীণ জলধারা
পরদিন কোচবিহারের মদনমোহন মন্দির ও রাজবাড়ি দেখে কলকাতার ট্রেণে উঠলাম। আমাদের সঙ্গীরা শিয়ালদা যাবেন। আমরা কয়েকটা স্টেশন পরে নিউ ময়নাগুড়িতে নেমে গেলাম দলছুট হয়ে । তিন দিন নির্জনবাসে কাটিয়ে কলকাতায় ফিরি।

মদনমোহন মন্দির, কোচবিহার

কোচবিহারের রাজপ্রাসাদ
[সংযোজনঃ
মেখলিগঞ্জ শহরটায় আমি আগেও বার দুয়েক এসেছি কর্মসূত্রে কয়েক ঘন্টার জন্য। এখান থেকে খুবই কাছে “তিন বিঘা করিডোর” দেখার ইচ্ছা ছিল আমার স্ত্রীর, কারণ আমি যখন এসে ছিলাম ২০১৫তে, ওঁর আসা হয় নি। এখানে বাংলাদেশের দুটি ছিটমহল – দহগ্রাম ও আঙ্গরপোতা একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল মাঝখানে ভারতীয় ভূখন্ড থাকায়। দীর্ঘ আলোচনার পরে, স্থানীয় মানুষদের বিরোধিতা কাটিয়ে, এবং কিছু অকারণ প্রাণহানির পর ভারত বাংলাদেশকে ৫৮৪ ফুট লম্বা এবং ২৭৯ ফুট চওড়া এই যাতায়াতের রাস্তাটি বরাবরের জন্য লীজ দেয়। এখন এখানে বি এস এফ-এর পোস্ট রয়েছে, এবং এই পথের দু ধার এমন ভাবে কাঁটা তার দিয়ে ঘেরা আছে যে মূল রাস্তা দিয়ে ছাড়া বাংলাদেশের (বা ভারতের ) মানুষজন যেতে পারবে না বি এস এফের চোখ এড়িয়ে। যখন একদেশের গাড়ি ও অন্যান্য যানবাহন অথবা পথচারীরা করিডরটা পার হয়, তখন অন্যদেশের দিক থেকে যাওয়া-আসা বন্ধ রাখা হয়। ঠিক একটা চৌরাস্তার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার মতো।
মেখলিগঞ্জ থেকে তিস্তার উপর প্রায় চার কিলোমিটার লম্বা জয়ী ব্রীজ পার হয়ে হলদিবাড়ি, জলপাইগুড়ি যাওয়ার পথে ভ্রামরী দেবী বা গর্ভেশ্বরী দেবীর মন্দির। বলা হয়ে থাকে, এটি একান্নটি শক্তি পীঠের অন্যতম । এখানে সতীর বাঁ পায়ের একটি অংশ পড়েছিল বলে প্রচলিত। এই জলপাইগুড়ি জেলার যে অংশ পাকিস্তানে (এখন বাংলাদেশ) পড়েছে, সেখানে পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলায় আছে আর একটি ভ্রামরী দেবী বা বোদেশ্বরী দেবীর মন্দির। সেই মন্দির আমি দেখেছি এবং সেখানেও মন্দিরটিকে ৫১ পীঠের একটি বলে দাবি করা হয়। সেখানে পুরোহিত গর্ভগৃহের ভিতর থেকে অতি যত্নে লাল কাপড়ে মোড়া একটি পাথর আমাদের দেখিয়েছিলেন দেবীর বাঁ পায়ের গোড়ালি বলে।
আমাদের জলপাইগুড়ি জেলার গর্ভেশ্বরী দেবী মন্দিরের কর্তৃপক্ষ সেটিকে প্রধান পীঠ এবং বোদার মন্দিরকে উপপীঠ বলে থাকেন। সে যাই হোক, ভারতে এরকম কয়েকশ’ একান্ন পীঠ আছে। আমরা সে বিতর্কে যাচ্ছি না। প্রাচীন কালে ত্রিস্রোতার তীরে দুটি মন্দির গড়ে ওঠায় আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। এখানে যে মন্দির দেখলাম তাতে পুনঃনির্মাণের ছাপ স্পষ্ট। পুরোহিত মশায় মন্দিরে না থাকায় আমরা প্রস্তরীভূত দেবী অঙ্গটি দেখার সুযোগ পেলাম না।
ফেরার পথে আমরা বাংলাদেশে ভারতের ছিট্মহল থেকে আসা প্রায় একহাজার জনের মধ্যে যাঁদের হলদিবাড়িতে পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে তাঁদের বাসস্থানগুলো বাইরে থেকে দেখে এলাম। জেনে ভাল লাগল যে এই নতুন নাগরিকরা সব সরকারি প্রকল্পের সুযোগ পাচ্ছেন এবং এখানকার জনসাধারণের সঙ্গে মিশে গেছেন।]